হজরত ইউনুস আ. পূর্ববর্তী যুগের একজন নবী ছিলেন। তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে আল্লাহর পথে আহ্বান করেছিলেন। কিন্তু তারা নবীর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। ইউনুস আ. তাদের আল্লাহর আজবের ভবিষ্যদ্বাণী করে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর তাঁর সম্প্রদায়ের বোধোদয় হয়। তারা নিজেদের অবাধ্যতার বিষয়টি বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে তওবা করেন। ফলে আল্লাহ তায়ালা আজাব উঠিয়ে নেন।
এদিকে নিজের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় ঘটনাক্রমে ইউনুস আ. সমুদ্রে মাছের পেটে পতিত হোন এবং আল্লাহর কুদরতে সেখান থেকে উদ্ধার হন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে বলেছেন,
وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِيْنَ- إِذْ أَبَقَ إِلَى الْفُلْكِ الْمَشْحُوْنِ- فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ الْمُدْحَضِيْنَ- فَالْتَقَمَهُ الْحُوْتُ وَهُوَ مُلِيْمٌ
আর ইউনুস ছিল পয়গম্বরগণের একজন।যখন সে পালিয়ে যাত্রী বোঝাই নৌকায় গিয়ে পৌঁছল। অতপর লটারীতে সে অকৃতকার্য হল। অতঃপর একটি মাছ তাকে গিলে ফেলল। এমতাবস্থায় সে ছিল নিজেকে ধিক্কার দানকারী। (সূরা সাফফাত, আয়াত : ১৩৯-১৪২)।
এখানে আল্লাহ তায়ালা ইউনুস আ.-কে নবী বলে অভিহিত করেছেন। একইভাবে সূরা নিসা ও সূরা আনআমে তাকে আম্বিয়াকে কিরামের অন্তর্ভুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন, কারো এ কথা বলা উচিত নয় যে আমি ইউনুস ইবনে মাত্তা থেকে উত্তম। (মুসনাদে আহমাদ।)
আরেক হাদিসে বিনয় প্রকাশের জন্য রাসূল সা. বলেছেন, আমাকে অন্যান্য নবীদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিওনা, ইউনুস আ.-এর ওপরও নয়। মুহাদ্দিসদের মতে এই হাদিসটি রাসূল সা. নিজের বিনয় প্রকাশের জন্য বলেছেন। সব নবীর ওপর মুহাম্মদ সা.-এর শ্রেষ্ঠত্বে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম সা. বলেছেন—
‘ছয়টি দিক থেকে সব নবীর ওপর আমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। আমাকে জাওয়ামিউল কালিম তথা ব্যাপক অর্থবোধক সংক্ষিপ্ত বাক্য বলার যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে, আমাকে ভীতি (শত্রুর অন্তরে আমার ব্যাপারে ভয়ের সঞ্চার করা) দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, গনিমতের মাল (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে, আমার জন্য সব ভূমিকে পবিত্র ও সিজদার উপযুক্ত করা হয়েছে, আমি সব মানুষের তরে প্রেরিত হয়েছি এবং আমার মাধ্যমে নবুওয়ত পরম্পরা শেষ করা হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৯৫)
ধর্ম ডেস্ক/আর কে-০৩