Sunday, October 13, 2024

দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

- Advertisement -

আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে যেন এই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সবাই যাতে এই পূজা উদযাপন করতে পারে, সেজন্য অসচ্ছল মন্দিরগুলোর অনুকূলে এবার প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে বরাদ্দ দ্বিগুণ করে চার কোটি টাকা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান জানান, সভায় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ৯ থেকে ১৩ অক্টোবর সারা দেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এবারের দুর্গা পূজা উদযাপন উপলক্ষে পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হচ্ছে— পূজামণ্ডপ নির্মাণকালে নিরাপত্তা ও পূজামন্ডপগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পূজামন্ডপগুলোতে আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউএনও অফিস ও থানা থেকে মনিটরিং করা হবে। সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও সেবা প্রদানের জন্য জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ বিশেষ টিম গঠন করা হবে। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নির্ধারিত স্থানে শারদীয় দুর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র‍্যাবের টহল নিশ্চিত করা হবে। দুর্গা পূজা চলাকালীন পূজামণ্ডপ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, র‍্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হবে। পূজা উদযাপনকালে প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত রাখা হবে।

সীমান্ত এলাকায় স্থাপিত পূজামণ্ডপগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিজিবির মাধ্যমে সতর্কতামূলক কার্যক্রম ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অনুরূপভাবে উপকূলীয় এলাকায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড নিরাপত্তা দেবে। বড় বড় পূজামণ্ডপগুলোতে র‍্যাব ও পুলিশের বিশেষ টহল এবং নজরদারি বাড়ানো হবে। দুর্গা পূজায় বিঘ্ন সৃষ্টিকারী ও দুষ্কৃতিকারীদের অশুভ তৎপরতা রোধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পূজামণ্ডপে অগ্নিকাণ্ডসহ অন্যান্য দুর্ঘটনা রোধে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দলকে প্রস্তুত রাখা ও উদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন নির্ধারিত স্থানে বিসর্জন কার্যক্রম শেষ করার ব্যবস্থা করবে। প্রত্যেক পূজামণ্ডপে স্থানীয় প্রশাসন, থানা, পুলিশ ফাঁড়ি এবং ফায়ার সার্ভিসের টেলিফোন নম্বর, মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হবে। পূজামণ্ডপে আগত শিশু ও নারী দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, ঢাকাসহ সারা দেশে বিশেষ করে পূজামণ্ডপ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা করা হবে। বিকল্প হিসেবে পূজামণ্ডপে জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হবে। সংশ্লিষ্ট পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক এবং পাহারাদার নিয়োজিত করা। দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিশেষ করে পুরান ঢাকা, নবাবপুর রাস্তাসহ সারা দেশের পূজামণ্ডপ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

পূজামণ্ডপের আশেপাশের ডাস্টবিন, রাস্তা, ড্রেন, নালা, পুকুর এবং প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ব্যবহৃত রাস্তাঘাট সংস্কার ও মেরামত করা। পুলিশ সদর দফতর, বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়, জেলা সদরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে একটি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা। আজান ও নামাজের সময়ে মসজিদের পার্শ্ববর্তী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা চলাকালে এবং বিসর্জনকালে শব্দ যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখা ও উচ্চস্বরে শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হবে। যেখানে ছাত্র সমন্বয়কদের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রয়োজন, সেখানে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।

স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এনটিএমসি’র মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব মনিটরিং করা হবে। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়মিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও মনিটরিং করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

-অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত