সাতক্ষীরা প্রতিনিধি- দুইবারের সাফ শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক অদম্য সংগ্রামী ফুটবলার সাবিনা খাতুন। বাংলাদেশের জন্য গৌরব ও সম্মান বয়ে আনা এই ফুটবলারের বাসায় আতিথেয়তা গ্রহণ করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। সম্প্রতি এ সাফজয়ীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তাকে জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাত ১০টায় সাবিনা খাতুনের বাড়িতে ফলের ঝুঁড়ি নিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান জেলা প্রশাসক। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাস। আলাপচারিতায় জানতে পারেন সাবিনার কঠোর অধ্যবসায় ও কঠিন সংগ্রামের ইতিহাস।
সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার ভাড়াবাসায় বসবাসকালে ২০০৬ সাল থেকেই সাবিনার ক্রীড়া অনুশীলন শুরু। বর্তমানে শহরের সবুজবাগ এলাকায় কোনোক্রমে মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে সাবিনার পরিবারের। ২০০০ সালে তার বাবা সৈয়দ আলী গাজীর মৃত্যুর পর পাঁচ বোন ও মাকে নিয়ে সাবিনার পরিবারে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। কিন্তু অদম্য সাহস ও প্রতিভা নিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটে চলেন সাবিনা। একমাত্র পরিবারের সহযোগিতায় সাবিনা আজ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার এক তারকা ফুটবলার।
প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সংগ্রাম করে ফুটবল ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। প্রতিটি খেলায় সাবিনার ক্রীড়ানৈপুণ্য ছিল আকর্ষণীয়। সাফ জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আর দলের জন্য বয়ে এনেছেন অসামান্য সম্মান। জেলা প্রশাসক সাবিনাকে আরও ভালো খেলার অনুপ্রেরণা প্রদান করেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবহিত হন এবং নিয়মিত লিগ চালু রাখার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সরু রাস্তা পেরিয়ে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনার ক্ষুদ্র পরিসরের বাসা দেখে তিনি সাতক্ষীরার এই কৃতিসন্তানের সম্মানার্থে এক টুকরো খাসজমি বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি দেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সমগ্র জাতির জন্য যারা সম্মান বয়ে আনেন তাদের আবাসনের ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান এই জাতির কর্তব্য।’ সেই কর্তব্যের অংশ হিসেবেই সাবিনা ও সাবিনার মতো দরিদ্র ও অসহায় খেলোয়াড়দের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।