শীতকালীন সবজিতে বাজার সয়লাবের পরও দাম কমেনি কোনো সবজির। এতে দিশেহারা হয়েছে পড়েছেন এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা সবজির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজি বাজারে থরে থরে টাটকা নানা রকমের শীতকালীন সবজি সাজিয়ে রাখা আছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, সিম, বেগুনসহ নানা সবজি দেখা যায় খুচরা ও পাইকারি বাজারে। তবে তুলনামূলক তেমন কোনো ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুরের বাসিন্দা মো. অহিদুজ্জামান ইয়াকুব কালবেলাকে বলেন, ৭০-৮০ টাকার নিচে কোনো সবজিই কিনতে পারি না। ৩০০ টাকার সবজি একদিনেই শেষ হয়ে যায়। আমরা সাধারণ মানুষ কি খেয়ে বাঁচব? চাল, পেঁয়াজ, ও আলুর দামও নাগালের বাইরে। দাম কমানোর ব্যবস্থা না হলে মানুষের কষ্টের শেষ থাকবে না।
তিনি বলেন, আজ ৫০০ টাকা দিয়ে সবজি আর মাছ কিনেছি যা দিয়ে ১ দিন পার হবে। মাসের ১৫ দিনেই বেতন শেষ হয়ে যায়। বাকি দিন ধারদেনা করে কাটাতে হয়।
আবু তালেব সবজি স্টোরের মালিক খুচরা ব্যবসায়ী মো. আবু তালেব বলেন, কিছুদিন ধরে শীত পড়া শুরু হয়েছে। শীতকালীন সবজিও সব বাজারে উঠেছে কিন্তু কোনো সবজির দামই কমতির দিকে নেই। আজ আমি পাইকারি বেগুন ৭০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, ফুলকপি ৭০, লাউ ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, সিম ৯০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, কাঁচাকলা ৪০ টাকা হালি দরে কিনেছি। প্রতি আইটেমে যদি ১০ টাকা বাড়তি ধরি তাহলেই ক্রেতারা রাগ হয়ে যায়। আমাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। আমরা যদি ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বেশি বিক্রি না করি তাহলে সংসার চলবে কী করে?
এ বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শীতকালীন সবজি বাজারে উঠলেও দাম কমেনি। দেশের বিভিন্ন যায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে সবজি ক্রয় করে নেয়। চাহিদা বাড়ছে কিন্তু সে হিসেবে যোগান বাড়েনি। তাই শীতকালীন সবজির দাম পড়ছেনা নিচের দিকে।
সবজি উৎপাদনকারী মো. তাইয়্যেবুর সিকদার বলেন, এখনো পুরোপুরি সবজি আসেনি। আগাম শীতকালীন সবজিতে আমরা দাম ভালো পাই। তবে আগামী সপ্তাহে সব সবজি বাজারে উঠলে দাম কমে যাবে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, শীতকালীন সব সবজি এখনো বাজারে আসেনি। বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির উপস্থিতি বেশি তাই দাম কমতি নেই। এ সপ্তাহের শেষে হয়তো দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে। পাশাপাশি আমরা নজরদারি করছি কোনো ধরনের সিন্ডিকেট যাতে তৈরি না হয়।
রাতদিন সংবাদ