যশোরের প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার আব্দুল বাকীর পৌনে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার চার্জশিট গ্রহন করেছে আদালত। একই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সিনিয়র স্পেশাল জজ ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম চার্জশিটের উপর শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম।
প্রধান ডাকঘরের সাবেক অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মুদ্রাক্ষরিক বর্তমানে খুলনার ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেলের কার্যালয়ে সংযুক্ত আক্কাছ শিকদার ও যশোর নৈশ ডাক ঘরের সাব পোস্টমাস্টার শেখ করিমুল্লাহ।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আব্দুল বাকী যশোর প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার পদে থাকাকালীন ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সঞ্চয় ব্যাংকের ১৭ জন গ্রাহকের পাশবই ব্যবহার করে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। আব্দুল বাকী তাদের পাশবই নিজের কাছে রেখে ডাকঘরের নথিতে টাকা জমা দেখিয়ে এবং পরবর্তীতে গ্রাহকদের সই নকল করে এক কোটি ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
আব্দুল বাকীকে এ টাকা আত্মসাতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন প্রধান ডাকঘরের সাবেক অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মুদ্রাক্ষরিক আক্কাছ শিকদার ও নৈশ ডাকঘরের সাব পোস্টমাস্টার শেখ করিমুল্লাহ।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শেখ মোহাম্মদ আলী নামে এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ১৩ লাখ টাকা উত্তোলনের সময় আব্দুল বাকী ধরা পড়েন। পরে ডেপুটি পোস্টমাস্টার মেহেরুন্নেছা লেজার যাচাই করে জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হন। এসব বিষয়ে গ্রামেরকাগজে সংবাদ প্রকাশ হয়।
এ ঘটনায় একই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের এবং অভিযুক্ত আব্দুল বাকীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন ডাকঘরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিষয়টি আমলে নিয়ে দুদক যশোরের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন এবং তিনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার ধার্যদিনে চার্জশিটের উপর শুনানি শেষে বিচারক চার্জশিট গ্রহণ ও পলাতক আসামিরে বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।