গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড বা গ্যাটকো দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীক অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এ তিন আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের কোনো ভিত্তি খুঁজে না পাওয়ায় এ আদেশ দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তিন-এর বিচারক আবু তাহের আলোচিত এ মামলায় আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিন মামলার ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানির দিন ধার্য ছিল।
বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ মামলা দায়ের করা হয়। এ কারণেই দীর্ঘ ১৭ বছর পার হলেও দুদক অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। আদালত অভিযোগের ন্যূনতম ভিত্তি খুঁজে না পাওয়ায় বেগম খালেদা জিয়া, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীক মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’ আদেশের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ অমূলক ও ভিত্তিহীন। সুষ্ঠু তদন্ত হলে মামলা থেকে সবাই অব্যাহতি পাবেন।’
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরের দিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটিকে জরুরি ক্ষমতা আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর ১৩ মে বেগম খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার লোকসান ঘটিয়েছেন। মামলার অপর আসামিদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী, আকবর হোসেনর স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব। আসামিদের মধ্যে এম সাইফুর রহমান, এম শামছুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, আকবর হোসেন, আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন। আর যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর অব্যাহতির পর ১১ জনের জনের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে অভিযোগ শুনানির অনুষ্ঠিত হবে।
অনলাইন ডেস্ক