বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষেত্রে তৈরি পোশাকশিল্প একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রধান শিল্প খাত। এই শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল ষাটের দশকে। তবে সত্তরের দশকের শেষের দিকে অন্যতম রপ্তানিমুখী এই শিল্প খাত সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং এই শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটতে থাকে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক বাজার চাহিদা সৃষ্টি করেছে দেশের তৈরি এই পোশাক শিল্প। এদিকে পোশাক শিল্পকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চলছে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত। এমন অভিযোগ শিল্প মালিকদের। তারা বলছে, এ মুহূর্তে পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় সংকট নিরাপত্তাহীনতা। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ববাজারে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্নের পাশাপাশি ক্রয়াদেশ বাতিলের শঙ্কা তাদের।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশ স্থিতিশীলতার পথে হাঁটলেও হঠাৎ অশান্ত হয়ে ওঠে তৈরি পোশাক শিল্প। সাভার-আশুলিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা অজুহাতে আন্দোলন ও কারখানা ভাঙচুর শুরু করে দুর্বৃত্তরা।
সহিংসতার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় বহু কারখানা। প্রশ্ন হলো—পোশাক শিল্প অস্থির করে তুলতে এমন ইন্ধন দিচ্ছে কারা?
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এরা কি শ্রমিক, আমরা তো মনে করি না এরা শ্রমিক। তারা বিভিন্ন কায়দায় চেষ্টা করছে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার। এই সেক্টরটাকে যদি অশান্ত করা যায় তাহলে বায়াররা বাংলাদেশে অর্ডার না দিয়ে অন্যদিকে দিবে। এ পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ী এটা আপনারা ভালো করে জানেন। এর পেছনে কাদের ইন্ধন রয়েছে এটাও বুঝাটা কঠিন কোনো কাজ নয়।
এদিকে এই বহিরাগত শক্তির সঙ্গে দেশি-বিদেশি চক্রের যোগসাজস থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিকেএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল। শিল্প মালিকরা বলছে, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়বে পোশাক খাত। ফায়দা নিতে ওত পেতে আছে বেশ কিছু দেশ। এদিকে কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে শিল্প মালিকদের সংগঠন—বিজিএমইএ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে। তাদের আশ্বাসে শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয় সব কারাখানা।
বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, আলোচনার মাধ্যমে কিছু সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যাবে, আর কিছু সমস্যার সমাধান হতে একটু সময় লাগবে।
তৈরি পোশাক শিল্পে সরাসরি নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। আর পরোক্ষভাবে উপকারভোগী কমপক্ষে দুই কোটি মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছে, এ শিল্প বিপদে পড়লে বিশাল জনগোষ্ঠী বিপদে পড়বে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি।
অনলাইন ডেস্ক।