যশোর শহরের শংকরপুরের যুবক সাইদুল ইসলাম সাঈদ ওরফে ভাইপো সাঈদ অপহরণ ও গুমের মামলাটি কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেব রুজু হয়েছে।
শুক্রবার রাতে আদালতের আদেশে অভিযোগটি থানায় রেকর্ড হয়েছে বলে জানা গেছে। গত রোববার অপহৃত সাঈদের পিতা কাজী তৌহিদুল ইসলাম ওরফে খোকন কাজী বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা করেছিলেন।
এ মামলায় পুলিশের সাবেক এসপি আনিচুর রহমান, এসআই, কনস্টেবল, কাউন্সিলরসহ ২৪ জনকে এ মামলায় আসামিরা হয়।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল সকালে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন যশোর পৌরপার্কে বেড়াতে যায়। এ সংবাদ তৎকালিন পুলিশ সুপার পেয়ে তার নির্দেশে অপর পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবলরা সাঈদ ও শাওনকে গ্রেফতার করে। সাঈদ ও শাওনের গ্রেফতার হওয়ার সংবাদ জানতে পেরে খোকন কাজী ও তার স্ত্রী দ্রæত পৌরপার্কে ও পরে থানায় গেলে কর্তব্যরত পুলিশ থানায় ঢুকতে দেয়নি। থানার গেটে অবস্থান কালে সাঈদের মা ও পিতার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দেন এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম ও এসআই আমির হোসেন। অন্যথায় তাদের দুই জনকে মেরে লাশ গুম করে দিবে বলে হুমকি দেন তারা। ৭ এপ্রিল সাঈদের মা হিরা খাতুন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন ছেলে সাঈদ ও তার বন্ধু শাওন পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছে। পত্রিকার এ সংবাদের সত্যতা জানতে থানায় গেলে সাঈদের মা হিরার সাথে খারপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয় পুলিশ। অপহৃত সাঈদের মা সংবাদ সম্মেলন করে ছেলেকে ফিরে পেতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেন। অপহৃত সাঈদের মা ও পিতার ধারনা পুলিশের দাবিকৃত ২ লাখ টাকা না দেয়োয় সাঈদকে হত্যা করে লাশ গুম করে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহৃত সাঈদের মা পুলিশ সুপারসহ পুলিশেল ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছিলেন।
এরআগে অপহৃত সাঈদকে ফিরিয়ে দিতে কাউন্সিলর ও তার সহযোগীরা হিরা খাতুনের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। হিরা খাতুনের কাছ থেকে তারা ১০ লাখ টাকা গ্রহন করে ছেলেকে ফিরিয়ে না দিয়ে তারা তাকে ধরে নিয়ে শাহিন চাকলাদারের বাড়িতে নিয়ে আদালতে করা মামলা প্রত্যাহেরর জন্য চাপ দেয়। হিরা খাতুন মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় তাকে এসপি অফিসে নিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে হিরা খাতুন বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ্য হয়ে মারা গেছে। সেই থেকে আজ আবধি অপহৃত সাঈদকে আর ফিরে আসেনি। বর্তমানে পরিবেশ অনুকলে আশায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছিলেন। আদালতের বিচারক অভিযোগটি গ্রহন করে এজাহার হিসেবে গ্রহন করার আদেশ দিয়েছেন কোতয়ালি থানার ওসিকে। আদালতের আদেশে থানা কতৃপক্ষ অভিযোগটি শুক্রবার রাতে নিয়মিত মামলা থানায় নথিভুক্ত করেছেন।
এ মামলার অপর আসামিরা হলো, কোতয়ালি থানার তৎকালিন এসআই এইচএম শহিদুল ইসলাম, এসআই আমির হোসেন, এএসআই হাসানুর রহমান, এইসআই রাজন গাজী, এএসআই সেলিম মুন্সি, এএসআই বিপ্লব হোসেন, এএসআই সেলিম আহম্মেদ, টিএসআই রফিক, কনস্টেবল আরিফুজ্জামন, হাবিবুর রহমান, আবু বক্কার, ড্রাইভার মিজান শেখ, মাহমুদুর রহমান, টোকন হোসেন, যশোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল গোলাম মোস্তফা, শহরের শংকরপুরের সাদেক দারোগার মোড় এলাকার মৃত রোস্তম আলীর ছেলে নুর ইসলাম নুরু, মৃত খলিল মিয়ার ছেলে আনিস, মুরগির ফার্ম এলাকার মৃত বাবলুর ছেলে অগ্রো, রায়পাড়ার মৃত কাওছার আলীর ছেলে হাসমত, হোসেন আলীর ছেলে মাসুম ও গোলপাতা মসজিদ এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে খালেদুর রহমান চন্নু।
রাতদিন সংবাদ/আর কে-১১