বিশেষ প্রতিনিধি
যশোর উপশহরের এহসানুল হক ইমু হত্যাকাণ্ডে আটক আল শাহরিয়ার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মাদক ব্যবসা নিয়ে দুর্জয় ও শাকিল নামে দুই যুবকের পূর্ব বিরোধের জেরে গত ২১ জুন রাতে উপশহর শিশু হাসপাতালের সামনে হাতাহাতি হয়। ইমু তাদের হাতাহাতি ঠেকাতে দুর্জয়কে থাপ্পড় মারে। এরই জের ধরে কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে ৯ জনে ইমুকে তারা কুপিয়ে হত্যা করে বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছে আল শাহরিয়ার। আটক আল শাহরিয়ার যশোর শহরের পালবাড়ি গাজীরঘাট রোডের বাসিন্দা।
আল শাহরিয়ার জানিয়েছে, পুরাতন কসবা এলাকার শাকিলের সাথে দুর্জয়ের মাদক বিক্রি নিয়ে পূর্ব বিরোধ ছিল।
গত ২১ জুন রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপশহর শিশু হাসপাতালে বিপরীতে রয়েল টি স্টলে ভিকটিম এসহানুল হক ইমু ও তার বন্ধু শোয়েব চা পান করছিল। পাশেই শাকিল, শাখাওয়াত ও তানভীর নামে আরো তিন জন যুবক সেখানে চা পান করছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে আল শাহরিয়ার তার বন্ধু দূর্জয় ও মাসুদ একটি মোটরসাইকেল সেখানে আসে। এসময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দূর্জয়, শাকিলকে চায়ের দোকানে পেয়ে মারধর শুরু করে এবং শাকিলের মোটর সাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়।
ঘটনাস্থলে থাকা এহসানুল হক ইমু তাদের মারামারি ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টাকালে দুর্জয়কে একটি থাপ্পড় মারে। এতে দুর্জয় ক্ষীপ্ত হয়ে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পাশাপাশি শাকিলও সেখান থেকে চলে যায়। রাত পৌনে ৯টার দিকে দূর্জয়, তার বড় ভাই বাবু ও এলাকার সোহাগ একটি মোটরসাইকেলে প্রস্তুতি নিয়ে পুনরায় আসে। আর তাদের সাথে আল শাহরিয়ার মাসুদ, ইয়াসিন, সুইট, শাহিন ও আসিফ ২টি অটোরিক্সায় আসে। প্রথমেই দূর্জয় ও সোহাগের হাতে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে ইমুকে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। পাশাপাশি তাদের সাথে থাকা আল শাহরিয়ার ও পলাতক শাহিন, বাবু, মাসুদ, ইয়াসিন, সুইট ও আসিফ তাদের হাতে থাকা দা দিয়ে ইমুকে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে অপরিচিত একটি রিক্সাচালক ইমুকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত পৌনে ৯টার দিকে ইমু মারা যান।
এই ঘটনায় ইমুর পিতা বাদী হয়ে পরদিন ২২ জুন রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রথমে কোতোয়ালি থানার এসআই কামাল হোসেন মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান। কিন্তু পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র এসআই স্নেহাশিষ দাস এই মামলার আসামি আল শাহরিয়ারকে আটক করে গতকাল বুধবার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেন। বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আকরাম হোসেন আসামি আল শাহরিয়ারের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। জবানবন্দিতে আল শাহরিয়ার বলেছে এই হত্যাকাণ্ডে তারা ৯জন ছিল। মাদক ব্যবসায় দুর্জয়ের সাথে শাকিলের বিরোধের ঘটনায় তারা ওইদিন শাকিলকে মারতে যায়। কিন্তু ইমু মারপিট ঠেকাতে দুর্জয়কে একটি থাপ্পড় মারে। তারই জের ধরে কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে ইমুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।