যশোরে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডে দন্ডিত জামাই আব্দুল আজিজকে আটক করেছে র্যাব-৬ যশোরের সদস্যরা। যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের টেকের বাজার নিমতলী গ্রাম থেকে বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬ যশোরের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি অধিনায়ক ফ্লাঃ লেঃ
মোঃ রাসেল। এরআগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস তাকে সাজা প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল আজিজ যশোর সদর উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মৃত মকছেদ মোল্লার ছেলে। শাশুড়ি ছায়েরা খাতুন একই গ্রামের মহিউদ্দিনের স্ত্রী।
মামলা সূত্রে যানা যায়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল আজিজের ছেলের সাথে নিহত ছায়েরার মেয়ে ইসমিনের বিয়ের কথা ঠিক ছিলো। এরমধ্যে আজিজ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজেই ইয়াসমিনকে বিয়ে করে। যা মেনে নেয়না ইয়াসমিনের পরিবার। একপর্যায় হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে মেনে নিতে বাধ্য করেন।
এরপর থেকে আজিজ ইয়াসমিনদের বাড়িতে অবস্থান করেন। কয়েকদিন পর ব্যাংক থেকে টাকা লোন নেয়ার কথা বলে শাশুড়ি ছায়েরা বেগমের কাছে জমির দলিল ও পর্চা চান। কিন্তু ছায়রা দিতে রাজি হয়না। এ নিয়ে গোলোযোগ বাধে এমনকি প্রকাশ্যেই হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দেয় আজিজ। সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৯ জুলাই রাতে ঘরের ভেতরে ঘুমাতে যান জেসমিন ও আজিজ। অন্যদিকে বারান্দার খাটে ঘুমাই ছায়রা বেগম ও তার স্বামী।
মধ্যরাতে আজিজ বাইরে বের হয়ে ছায়রাকে ডেকে নেয়। এরপর রান্নাঘরের পেছনে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ছায়রার গলায় গামছা পেচিয়ে পাশের একটি আমগাছের ডালে লাশ ঝুলিয়ে দেয়। পরবর্তিতে সকলের কাছে প্রচার করা হয় ছায়রা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ছায়রার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উঠে আশে ছাইরাকে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনার একমাস পর ২৪ আগস্ট ছায়রার ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই ওহেদুজ্জামান আব্দুল আজিজকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয় আদালত। আজিজ পলাতক থাকায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। র্যাব আজিজকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে।
রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৫