Saturday, October 12, 2024

যশোরে ব্যাপক পুলিশি অভিযান আ’লীগ ঘরানার আটক ১৩ জন

- Advertisement -

বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মামলার আসামি এবং নানা অভিযোগ রয়েছে দাবি করে ১ অক্টোবর দিবাগত গভীর রাতে যশোর শহর, শহরতলী ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ কয়েকটি টিমসহ আরো কয়েকটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ অভিযান চালিয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। আর এ অভিযানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মী আটক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক। যশোর জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলায় তাদের আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।

আটককৃতরা হচ্ছেন পূর্ববারান্দিপাড়া বটতলার হুমায়ুন কবির (৫৫), রবিউল বিশ্বাস (৫৫), ছোট গোপালপুরের জাকির হোসেন (৪২), উপশহর ১নং সেক্টরের শাহিন (৩৫), ভাতুড়িয়া বাজার এলাকার আতিয়ার রহমান (৫৬), করিচিয়ার ফিরোজ হোসেন (৫০), মনোহরপুরের শরিফুল মোল্লা (৪৮), কিসমত রাজাপুরের মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম (৪৫), গাওঘরার জাহিদুর রহমান বাচ্চু (৩৫), রামনগরের ওসামা বিন ইব্রাহিম (২২), গাইদগাছির রফিকুল ইসলাম (৪২), হাটবিলা জামতলার রওশান আলী (৫০) ও আব্দুলপুরের আনিছুর রহমান (৪৬)।

গত জুলাই আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্নস্থানে থানা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশি মুভমেন্ট কমে যায়। আর বিগত দু’মাস যশোর পুলিশও কার্যকরভাবে মাঠে না থাকার সুযোগ নিয়ে অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার মত জোরেসোরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন মামলার আসামি, অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটগুলোর সদস্যরা। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা চলমান পরিস্থিাততে পুলিশের অপরাধ বিরোধী অভিযান কমে যাওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। এর মাঝে ১ অক্টোবর রাতে যশোর শহর ও শহরতলী এবং বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। আর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতা কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উপরে উল্লেখিত ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। যশোর শহরের পুরাতন কসবা, পোসটঅফিস পাড়া, বারান্দিপাড়া, সিটি কলেজপাড়া, চাঁচড়া রায়পাড়া, বিরামপুর, উপশহর, খোলাডাঙ্গা, ধর্মতলা, পালবাড়ি, লোনঅফিস পাড়া, ষষ্টিতলাপাড়া, শংকরপুর, রেলগেট, মুজিবসড়ক, নীলগঞ্জ, ঝুমঝুমপুর, ঘোপ জেল রোড, বেজপাড়া, আরএন রোড, খড়কি, কারবালা এলাকাসহ আরো কয়েকটি গ্রামে অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

গত ৪ আগস্ট দুপুরে যশোর শহরের লালদীঘির পশ্চিমপাড়ে বিএনপি অফিস ভাংচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলার আটককৃত ১৩ জনকে চালান দেয়া হয়েছে। ৪ আগস্ট বিকেল ৫ টার দিকে অজ্ঞাত দেড়শ’জন আসামি বঙ্গবাজারের সামনে দিয়ে লালদীঘির পশ্চিমপাড়ে যায়। সে সময় কয়েক যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে বিএনপির অফিসের তালা ভেঙে লুটপাট, অফিস তছনছ ও পরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মামলা হয় বিএনপির পক্ষে। ওই মামলায় চালান করা হয়েছে আটককৃত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের।

এদিকে আওয়ামী লীগের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, বিগত জুলাই ও আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর যশোরের অনেক নেতকর্মী গা ঢাকা দিয়ে আছেন, আবার অনেকে পুরোনো অনেক ঘটনায় করা মামলায় আসামি হয়েছেন। আর যারা সাধারণ নেতাকর্মী তারা নানা শঙ্কা নিয়ে এলাকায় ও বাড়িতে অবস্থান করছেন। এরই মাঝে ১ অক্টোবর রাতে অনেক নেতা কর্মীর বাড়িতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আর অনেককে আটকও করা হয়েছে। বাড়িতে অভিযান চালালেও আত্মগোনে থাকায় অনেক নেতা কর্মীকে পায়নি পুলিশ।

এ ব্যাপারে যশোর কেতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, বিভিন্ন মামলার আসামি আটক ও অপরাধ সন্ত্রাসী বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মামলার আসামি ও নানা অভিযোগে অভিযুক্ত আওয়ামী ঘরানার ১৩ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে ১ অক্টোবর রাতে। এদের কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ যুবলীগ, আবার কেউ ছাত্রলীগের। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আ্ইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেটগুলোর দিকেও নজরদারি করছে পুলিশ। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধী আটক করা হচ্ছে এবং আটক করা হবে। মাদক ব্যবসায়ীসহ সব ধরণের অপরাধী আটক ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রাতদিন সংবাদ/আর কে-১৮

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত