কখনো আইনজীবী সহকারী, আবার কখনো জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো চিহ্নিত প্রতারক শহিদুল ওরফে পাকা শহিদুলের বিরুদ্ধে আরও দুইটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার মণিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের আববার আলী গাজীর ছেলে রশিদ ও গফুরের মেয়ে মাহাফুজা বেগম বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা করেন। বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে মণিরামপুর থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাভিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
এরআগে গত ২০ অক্টোবর কোদলাপাড়া গ্রামের রুপচাঁনের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি ও টাকা না দেয়ায় বাড়িতে হামলা করে রুপচাঁনের গলায় চাকু ধরে ৫৫ হাজার টাকা লুট করতে যেয়ে ধরা খায় শহিদুল। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়। কিন্তু সম্প্রতি জামিনে বের হয়ে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এই প্রতারক শহিদুল।
মামলায় রশিদ উল্লেখ করেন, ওই শহিদুল চারমাস আগে তাকে জানায় বৈদ্যতিক ট্রান্সফার্মার, খুটিসহ সেচপাম্প স্থাপন করে দেবেন বলে জানান শহিদুল। এরজন্য রশিদের কাছে তিনলাখ টাকা দাবি করে। রাজী হয়ে রশিদ ওই শহিদুলকে তিনলাখ টাকা দেন। এরপর নয়ছয় শুরু করে শহিদুল। পরে রশিদ বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন শহিদুল এমন অসংখ্য মানুষের কাছথেকে বৈদ্যতিক ট্রান্সফার্মার, খুটিসহ সেচপাম্প স্থাপন করে দিতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে বললে নানা অযুহাতে ধুরাতে থাকেন রশিদ। সর্বশেষ গত ১০ নভেম্বর সকালে রশিদ তার আত্বীয় স্বজনদের নিয়ে শহিদুলের বাড়িতে যেয়ে পাওয়ান টাকা ফেরত চাইলে হত্যার হুমকি দেন। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় থেকে আইনের আশ্রয় নিতে আদালতে হাজির হয়েছেন রশিদ।
অন্যদিকে, মাহাফুজা বেগমের অভিযোগ একই ভাবে তার কাছথেকেও বৈদ্যতিক ট্রান্সফার্মার, খুটিসহ সেচপাম্প স্থাপন করে দেয়ার নামে তিনলাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ওই টাকা ফেরত তো দেয়নি বরং নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে তিনিও আদালতে পৃথক মামলা করেছেন।
এছাড়া সম্প্রতি শহিদুল ইসলাম, রোহিতার খায়রুজ্জামান আকাশের বাবা রুপচাঁনের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে । টাকা না দেয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শহিদুলসহ আরও কয়েকজন আকাশের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় টাকা না দিলে রুপচানের গলায় চাকু ধরে জবাই করে হত্যার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে রুপচান বাড়িতে থাকা ধান বিক্রির ৫৫ হাজার টাকা তুলে দেয় শহিদুল চক্রের হাতে। সাতদিন সময় নির্ধারণ করে বাকি টাকা না দিলে জমি লিখে নেয়ার হুমকি দিয়ে শহিদুল চক্র চলে যান। পরে আকাশ এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় শহিদুল ও তার ছেলে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনায় শহিদুল আটক হন অন্যদিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে শহিদুলের ছেলে আলাউদ্দিন। পরে জামিনে বের হয়ে আবারও নানা ধরণের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ফের আদালত চত্তরে এসে নিজেবে আইনজীবী সহকারী পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছেন।