যশোরের মণিরামপুরের সেন্ট্রাল হসপিটালে এক প্রসূতির অপারেশনের সময় পেটে গজব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তার অবস্থা গুরুতর। এদিকে, আর্থিক সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে না পেরে ওই গৃহবধূ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ ও আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
২ জুলাই সদর উপজেলার সিরাজসিংহা গ্রামের হোসেল রানার প্রসূতি স্ত্রী মারিয়া আক্তার ওরফে তিশা আক্তার সেন্ট্রাল হসপিটালে ভর্তি হন। ওইদিন সেখানে তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার ফারজানা আক্তার সুমি তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। দু’দিন পর হসপিটালে ১৮ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করে বাড়িতে চলে যায় রোগী। পরবর্তীতে হঠাৎ রোগীর ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত শুরু হয়। এরপর পুনরায় রোগীর স্বজনরা তাকে মণিরামপুর সেন্ট্রাল হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে ১১ দিন ভর্তি রেখেও ডাক্তার রোগীর সমস্যা ধরতে পারেননি। একপর্যায়ে রোগী সুমীর স্বজনরা ওই হসপিটালে হট্টগোল করে রোগীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দায়িত্বরত গাইনি বিশেষজ্ঞ হাসনে-আরা-পারভীন আল্ট্রাসনোগ্রাফি করিয়ে জানান, রোগীর আবারও অপারেশন করাতে হবে। সেখানে রোগীকে দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করালে পেট থেকে গজ ও ব্যান্ডেজ বের হয়। ২২ জুলাই থেকে ওই রোগী আজও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ডাক্তার হাসনে-আরা-পারভীন জানান, ওই রোগী অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। দ্রুত অপারেশন না করলে রোগীর খারাপ কিছু ঘটতে পারতো। তার পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ উদ্ধার করা হয়েছে। ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী সুমীর স্বামী হোসেল রানার অভিযোগ, তার স্ত্রী মণিরামপুর সেন্ট্রাল হসপিটালে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। সেখানে দীর্ঘদিন ভর্তি থাকলেও রোগীর সমস্যা তাদের জানানো হয়নি। পরবর্তীতে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে রোগীকে অন্য স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পর পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করেছেন। এ পর্যন্ত তার স্ত্রীর পিছনে চিকিৎসা বাবদ প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে, কিন্তু এখনো সুস্থ হয়নি। নবজাতক সন্তান এখনো মায়ের কোলে যেতে পারেনি। অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হতে চলেছে। তিনি এ বিষয়ে সিভিল সার্জন অফিসে লিখিত অভিযোগ দেবেন। একইসাথে আদালতে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করবেন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি