নড়াইল প্রতিনিধি- হত্যা মামলার এজাহারে ছেলেটির নাম নেই। নাম না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে গত রোববার গভীর রাতে বাড়ি থেকে আটক করে হত্যা মামলায় চালান দিয়েছে। আদিবাসি সম্প্রদায়ের ওই ছেলেটির নাম রিপন বিশ্বাস (২০)। সে দিন মজুরের কাজ করে। এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের চন্ডিবরপুর গ্রামে। এর প্রতিবাদে এবং ওই পুলিশ কমকতার বিচারের দাবিতে আজ বুধবার বেলা ১১টায় আদালত চত্বরে মানববন্ধন কমসূচি পালন করে আদিবাসি সম্প্রদায়ের প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অশোক কমর্কার, রমেশ বিশ্বাস, মিন্টু বিশ্বাস প্রমুখ। মানববন্ধন থেকে ওই পুলিশের এমন অমানবিক কর্মকান্ডের জন্য উপযুক্ত বিচার দাবি করা হয় এবং রিপন বিশ্বাসকে অনৈতিকভাবে মামলার আসামি করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেবার দাবি করা হয়। জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদশর্ক (এসআই) আব্দুল হক বলেন, মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তাকে থানায় এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলা নম্বর (২৭) ইং তাং ২০/০৭/২৪
মানববন্ধনে অংশ নেয়া রিপন বিশ্বাসের মা সবিতা বিশ্বাস বলেন, রোববার রাত ১২টার দিকে পুলিশ
আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। আমার ছেলেকে অত্যাচার-নিযার্তন করা হয়েছে। গ্রামের কোথায় হত্যা হইছে আমরা কেউই জানিনা। তিনি বলেন, আমার ছেলে দিন মজুরের কাজ করে। তার আয়ের ওপর আমার সংসার চলে। আমার ছেলেকে ছেড়ে না দিলে আমরা না খেয়ে মারা যাব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের মুরুব্বীরা বলেন, ইউপি নিবার্চনের সময় গ্রামের পূর্ব পাড়ায় মো. আমির শেখের ছেলে মো. ইলিয়াছ শেখকে হত্যা করা হয়। আমরা থাকি গ্রামের পশ্চিম পাড়ায়। চিত্রা নদীর ত্রিমোহনীতে। আমাদের এখানে আসতে হলে নদীর পার হয়ে আসতে হয়। তিনি দাবি করেন আমরা হিন্দু মানুষ। নদী পার হয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গ্রামের পূর্ব পাড়ায় গিয়ে একজন মুসলমান মানুষকে হত্যা করতে যেতে পারি কি?
শিখা রানী বলেন, আমরা কয়েক ঘর আদিবাসি এখানে বাস করি। আমরা এখানে দূর্গা পূজা করে থাকি। আমাদের গ্রামের একজনকে হত্যা মামলার আসামি করায় আমাদের পূজাটাই নষ্ট হয়ে গেল। আমাদের ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হোক।
মামলার আসামি পক্ষের কৌশলী রাজিব আহম্মেদ রাজু বলেন, এই মামলা সমপর্কে রিপন বিশ্বাস কিছুই জানেনা। তিনি দাবি করেন পুলিশ একটি নিরীহ দিনমজুর ছেলেকে ধরে এনে জোর পূবর্ক স্বীকারোক্তি নিয়ে মামলার আসামি করেছেন।