Monday, September 16, 2024

আপন চাচার ধর্ষণে ভাতিজি আট মাসের অন্তসত্ত্বা

- Advertisement -

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে আপন চাচা কর্তৃক সহজ-সরল ও নিরীহ কিশোরি ভাতিজিকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের পর আট মাসের অন্তসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় অবশেষে অভিযুক্ত ধর্ষক সোহেল কে গ্রেফতার করেছে। ওই কিশোরীর বাবার দায়ের করা মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। আদালতে কিশোরী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের হেসিয়ারা পূর্বপাড়ার আবদুল মন্নানের ছেলে সোহেল আপন ভাতিজিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে ভাতিজি আট মাসের অন্তসত্ত্বা হলে এলাকায় ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। একপর্যায়ে বিষয়টি ‘টক অব দ্যা নাঙ্গলকোটে’ পরিণত হয়। বিষয়টি নিয়ে সমাজপতিরা কয়েক দফা সালিশ বৈঠকে বসলেও কোন সুরাহা না করে সময়ক্ষেপন করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এতে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার না হলে কিশোরির ভাই রাসেল তার বোনকে নিয়ে আত্মহত্যা করার ঘোষণা দেয়। শনিবার ১৪ জুন বিকেলে নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী নিজ উদ্যোগে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে কিশোরির ভাই রাসেলকে থানায় নিয়ে আসেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টায় কিশোরি এবং তার পিতাকেও থানায় হাজির করা হয়। রাত ১২টার দিকে কিশোরির পিতা তার মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে আপন সহোদর সোহেলকে আসামী করে থানায় নারি ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।পুলিশের হাতে গ্রেফতার ভাতিজির অভিযুক্ত ধর্ষক চাচা সোহেল।থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, কিশোরির মা অসুস্থ থাকায় গত বছরের নভেম্বর মাসে তার পিতা মাকে নিয়ে কুমিল্লার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে যান। চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক তারা ওই ক্লিনিকে ৫/৬দিন অবস্থান করেন। এ সুযোগে বাড়িতে কেউ না থাকায় কিশোরির চাচা সোহেল কিশোরিকে জোরপূর্বক ধর্ষন করেন। টানা চারদিন ধর্ষণ করে বিষয়টি কাউকে প্রকাশ করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ভয়ে সহজ-সরল কিশোরি কাউকে জানায়নি। এরই মধ্যে তার মা অসুস্থতা নিয়ে মারা যান। চাচার ধর্ষণে সে আট মাসের অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়লে এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ বসলে কিশোরি তার সর্বনাশের জন্য চাচা সোহেলকে দায়ী করেন।এরই মধ্যে এলাকার তরুণ ও সচেতন মহল বিষয়টির সুষ্ঠু বিচারে সেচ্ছার থাকলেও কতিপয় সমাজপতি বিচারের নামে সময়ক্ষেপন করে ঘটনাটি ধমাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত সোহেল প্রকৃত ঘটনা থেকে নিজেকে আঁড়াল করতে হেসিয়ারা গ্রামের সমাজপতি পোস্টমাষ্টার আবুল হাশেমের ছেলে রিয়াদ ঘটনার সাথে জড়িত বলে এলাকায় প্রচার করলেও কিশোরি তার জবানবন্দিতে চাচা সোহেল ছাড়া অন্য কাউকে দোষারোপ করেননি।সোহেল তার ৩টি গরু প্রায় ৪ (চার) লাখ টাকা বিক্রি করে সমাজপতি ও ক্ষতিগ্রস্ত কিশোরির মেয়ের বাবার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যান বলেও অভিযোগ ওঠেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস.আই) আখতার হোসেন বলেন, কিশোরিকে ধর্ষণের পর অন্তসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় তার চাচা সোহেলকে দায়ী করে কিশোরী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কিশোরির পিতা বাদী হয়ে তার চাচার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করেছেন। রাতেই আসামিকে ধরার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়। পরে গতকাল রোববার সকালে বাঙ্গড্ডা এলাকা থেকে আসামি সোহেলকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিশোরির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সন্তান প্রসবের পর কিশোরির ডিএনএ টেষ্ট করা হবে।

অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত