মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকেলে মণিরামপুর প্রেসক্লাবে পৈত্রিক জমির কাটা ধানা লুটকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন ভ’ক্তভোগি হাফেজ মাওঃ নজরুল ইসলাম। এসময় তিনি ও তার বয়োবৃদ্ধা মা জরিনা বেগম, বোন আমেনা বেগম ও মেরিনা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং সন্ত্রাসী রহিম বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের পৈত্রিক জমির কাটা ধান সন্ত্রাসীরা লুট করে নিয়ে গেলে থানা পুলিশের কিছু করার থাকে না এমন কথা বলেছেন পুলিশ। কেননা এ নিয়ে ভ’ক্তভোগি একাধিকবার থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ নিস্ক্রয় ভুমিকায় রয়েছে। অভিযোগের পর আরো বেপোরোয়া হয়ে অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে কাটা ধান লুট করে নিয়েছে সন্ত্রাসী রহিম বাহিনী। পৈত্রিক জমির ধান লুটকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রয়তার অভিযোগ উঠেছে। যশোরের মণিরামপুরের ছিলুমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভ’ক্তভোগি নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর প্রৈত্রিক ৬৪ শতক জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। ওই জমি নিয়ে বড় ভাই রেজাউল করিমের সাথে বিরোধ হয়। বিরোধপূর্ণ জমি কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে নিজের দাবি করে। এতে পরিবারের অন্যান্যদের খুন জখমের হুমকি দেওয়ার কারণে পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে গত ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মণিরামপুর থানায় জিডি করা হয়। যার জিডি নং- ৬৩৪। নিজের মা, ভাই-বোন এবং ফুফুদের সম্পত্তি জালিয়াতি করার ঘটনায় রেজাউল ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় মামলা করা হয়। মামলা নং- ৬৪/১৯, যা বিচারাধীন রয়েছে।
সম্প্রতি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আব্দুর রহিম ওই জমিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিলে নজরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে রহিম দাবি করে সে জমি বন্ধক নিয়েছে। এক পর্যায় নজরুল ইসলামের কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর নজরুল ইসলাম ৬৫ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ জমির ধান কেটে রাস্তায় রাখলে রাতে কাটা ধান লুট করে নিতে থাকে রহিম বাহিনী। ভূক্তভোগি নিরুপয় হয়ে ৯৯৯ ফোন দেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসীদের আটক করে। পরে থানায় বসাবসির কথা বলে ছেড়ে দেয়। বসাবসির জন্য নজরুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থানায় গেলে কাটা ধান চিহ্নিত সন্ত্রাসী রহিম বাহিনী লুট করে নিলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
মা জরিনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ছেলের প্রাণ বাঁচাতে রহিমকে ৪ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু তাতে থামেনি রহিম বাহিনী। এখন তিনি ছেলের জীবন নিয়ে সংশয়ে আছেন। এ ঘটনায় গত ১৩ এপ্রিল, ২২ এপ্রিল এবং ২৭ এপ্রিল সন্ত্রাসী রহিম বাহিনীর বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় এবং যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয় রহিম বাহিনী। থানায় পৃথক দুটি অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই আব্দুর রহমান এবং এসআই সরোজিৎ মন্ডলকে জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এ ব্যাপারে তদন্তকারি কর্মকর্তা এএসআই আব্দুর রহমান বলেন, বিষয়টি তার কাছে প্রথমে তদন্তভার থাকলেও পরে এএসআই সরোজিৎ মন্ডলের কাছে দেওয়া হয়।
এএসআই সরোজিৎ মন্ডল বলেন, কারো জমির ধান জোর করে কেউ কেটে নিয়ে গেলেও তার কিছু করার নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বসাবসির জন্য ডাকা হয়েছিল কিন্তু একপক্ষ হাজির হলেও রহিম পক্ষ হাজির হয়নি।