- Advertisement -
মানবতাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে প্রতিষ্ঠার মানসে সারাদেশের মতো যশোরেও শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসায় উদযাপিত হয়েছে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী। রবীন্দ্রচর্চাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি তার কালজয়ী জীবনদর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে মানব মুক্তির পথ অন্বেষণের প্রত্যয় ছিল সমগ্র অনুষ্ঠানের মর্মবাণী। বাঙালির মন-মানসিকতা গঠন ও চেতনার উন্মেষের অন্যতম প্রধান প্রেরণার উৎস রবীন্দ্রনাথের গান, কবিতা ও নাটকের বিভিন্ন আয়োজনে সংগঠনগুলো তাদের অনুষ্ঠানের ডালি সাজায়।
পুনশ্চ : ‘হে নূতন দেখা দিক আরবার জন্মেরও প্রথম শুভক্ষণ’ সমবেত কণ্ঠে এ গানের মাধ্যমে শুরু হয় পুনশ্চের কবি শ্রদ্ধা। এরপর একে একে অনুষ্ঠান মঞ্চে ফুটতে থাকে নাচ, গান, আবৃত্তি আর কথা মালার ফুল। রবীন্দ্রনাথের বাণীর ঐশ্বর্যে, ভাষার নৈপুণ্যে ও মানবিক মাঙ্গলিকতার বোধের অকৃত্রিম রূপ রসে সমৃদ্ধ সে ফুল তার সৌরভ বিলাতে একটুও কার্পণ্য করেনি। আর তাইতো টাউনহল মাঠের রওশন আলী মঞ্চ ছাপিয়ে সে সৌরভ পৌঁছে যায় রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের হৃদয়েও। শিল্পীদের সাথে সাথে অনেকেই মনের অজান্তেই গুণগুণিয়ে গেয়েছেন ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এ রাজার রাজত্বে’; ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে’; কিংবা ‘প্রেমের জোয়ারে ভাসাবে দোহারে বাঁধন খুলে দাও..’ গানগুলো। কবিগুরুর পূজা, স্বদেশ, প্রেম, বিচিত্র, প্রকৃতি পর্যায়ের গানের সুরে তপ্ত আবহাওয়াতে যেন প্রশান্তির শীতল বাতাসের পরশ পায় সকলে। পুনশ্চের এবারের কবি প্রণামে সুরের ঝর্ণা ধারার সাথে সাথে নৃত্যের ঝংকারও ছিল হৃদয়াগ্রাহী। নাটক একান্নবর্তীর মঞ্চায়নও ছিল প্রশংসার। অধিকাংশ পরিবেশনা ছিল সমবেত। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পৌর মেয়র হায়দার গনি খান পলাশসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আসেন।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি : রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিকেল ৫ টায় একাডেমি মিলনায়তনে একাডেমির সভাপতি জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন যশোর সরকারি সিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর সবুজ শামীম আহসান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সাধন দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম ও অশোক কুমার রায়। কামরুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তৃতা করেন জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার আলী। আলোচনা শেষে শিল্পকলার শিক্ষার্থী বন্ধুরা পরিবেশন করেন মনোমুগ্ধকর নৃত্য, আবৃত্তি ও গান।
সুরধুনী : সংগঠন আঙিনায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সুরধুনী। বরাবরের মতো রবীন্দ্র জয়ন্তী উদযাপনে এ সংগঠনের অনুষ্ঠানমালায় ছিল ভিন্নতার স্বাদ। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে সংগঠনের অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান সবসময়ই উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। সংক্ষিপ্ত পরিসরের আলোচনা শেষে সংগঠনের ছোট বড় শিল্পীদের পরিবেশনায় গান, নৃত্যের তালে তালে কবি প্রণাম জানায় সংগঠনটি।
উপশহর কলেজ : শিক্ষক মিলনায়তনে বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করে উপশহর কলেজ। অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী অধ্যাপক কাজী শওকত শাহী। কবির জীবন ও সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বক্তৃতা করেন কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য সুরকার, গীতিকার ও কবি কাসেদুজ্জামান সেলিম, গাজী শহিদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নার্গিস খন্দকার, সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
রাতদিন সংবাদ
- Advertisement -