Tuesday, April 23, 2024

গ্রামের কবরস্তানে পাশাপাশি দাফন করা হলো কালু ও আজিজকে

- Advertisement -

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির পর মিন্টু ওরফে কালু এবং আজিজকে নিজ গ্রাম চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার লক্ষ্মীনারায়নপুর গ্রামের গোরস্তানে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ফজরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাদেরকে দাফন করা হয়। এর আগে একবার মরদেহ কবরে নামানোর সাথে সাথে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে দাফন কিছুটা বিঘ্নিত ও বিলম্বিত হয়। একসাথে অনুষ্ঠিত দুইজনের জানাজায় গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

মিন্টু ও আজিজের মরদেহ তাদের গ্রাম রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামে পৌঁছায় সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে। ভোরের সাথে সাথে তাদের মরদেহ দেখতে আশপাশের গ্রামগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ ভিড় করতে থাকেন। জানাজার পরও মানুষের ঢল অব্যাহত ছিল। দাফনের পর অনেকে তাদের কবর দেখতে যান।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে সোমবার রাত পৌনে ১১টায় কার্যকর করা হয় মিন্টু ওরফে কালু এবং আজিজের ফাঁসির রায়। তারা আলমডাঙ্গার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে ধর্ষণের পর গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের গলা কেটে দেয়। এই বিষয়ে দায়ের হওয়া মামলায় ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও কালুকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০১২ সালে ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং অপর আসামি সুজনকে বেকসুর খালাস দেন। ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান খালাসপ্রাপ্ত সুজন। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজিজ ও কালু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হন।

ফাঁসির রায় কার্যকরের পর সোমবার রাত ১২টার দিকে মরদেহ দু’টি নিজ নিজ পরিবারের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১২টার দিকে দুজনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে পৃথক অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশ পাহারায় নিয়ে রওনা দেন স্বজনরা। রাত আড়াইটার দিকে তারা রায়লক্ষ্মীপুরে পৌঁছান।

আজিজুল ও মিন্টুর দাফনের জন্য গ্রামের মসজিদে নির্ধারিত সময়য়ের ১০ মিনিট আগেই হয়ে যায় ফজরের জামাত। এরপর মসজিদের সামনের ফাঁকা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। আজিজ ও মিন্টুর মরদেহ সামনে রেখে একইসাথে জানাজা পড়ানো হয়।

গ্রামবাসী জানান, আজিজুলের মামাতো ভাই ঝিনাইদহের সাধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানাজার নামাজে ইমামতি করেন। সকাল হওয়ার সাথে সাথে গ্রামের গোরস্তানে পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন করা হয়।
স্থানীয় খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মরদেহ কবরে

নামানোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। এ কারণে দাফনকাজে কিছুটা বিলম্ব ও বিঘ্ন ঘটে। ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ফাঁসির আগে দেয়া সুযোগ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতের সময় কালু ও আজিজ সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে কাঁদতে থাকেন। মরদেহ রাতেই বাড়িতে পৌঁছানোর সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস। পরে সকাল ৬টায় দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

অনলাইন ডেস্ক

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত