দরজার বাইরে যমদূত হয়ে অপেক্ষা করছে covid -19 নামক শকুনেরা। চীনের উহান শহর থেকে পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মৃত্যুর মিসাইল হয়ে। শকুনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মায়ের কোলের অবুজ শিশু থেকে শুরু করে প্রৌঢ় বৃদ্ধ । পৃথিবীর বড় বড় ডাক্তারগুলো নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে স্বজনের মৃত্যু দেখছে।স্বজনদের অন্তিম যাত্রায় পাশে কাউকে পাচ্ছে না রুগীরা, হয়তো প্রিয় মানুষটিকে বলতে চাওয়া হাজার কথার পাহাড় জমে আছে বলা হয়নি,আর হবেও না কারো! শ্মশান গোরস্থান গুলোতে ঠাই মিলছেনা লাসের।হয়তো রাস্তার পাশে শকুন, কুকুর ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে পঁচা লাস।আমরা জাতি হিসাবে সচেতন না। তার কিছু আভাস আমরা পাচ্ছি,আমরা হয়তো সব বুঝি! কেউ আবার বুঝেও না বুঝার ভান করি। মানুষ বড়োই অদ্ভুত জীব,অভিযোজন ক্ষমতার লড়াইয়ে ঠিকে থাকতে কে না চাই।জীবনের সর্বস্ব দিয়ে আকড়ে থাকার চেষ্টা করি।বিপদে পড়লে, বানের স্রোতে ভেসে থাকার জন্য হাতের কাছের পাওয়া খড় কুটোকে অবলম্বন করে বাঁচতে চাই। বাঁচতে চাই আরো কিছু ক্ষন,আরো কিছু বছর, আরো কয়েকটা যুগ। তার জন্য প্রযোজন কিছু দিনের সামাজিক দূরত্ব। আজ এই মহামারী ক্রান্তিলগ্নে করোনা ভাইরাস এতোটাই পৃথিবীতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, তা বলার কোন ভাষা আমার জানা নেই। ১৭৭০,১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষের সাদা কালো ছবি গুলোর আদলে নতুন করে আবার কি ডিজিটাল ক্যামেরায় একাবিংশ শতাব্দীতে রূপালী ফ্রেমে বন্দী হতে চলছে নতুন কোন দুর্ভিক্ষ। ভাবছেন আমারা আধুনিকতার চরম শিখরে পৌছে গেছি তাইনা! মনে রাখবেন হায়েনা,শেয়াল,শকুন দেখা এখন হয়তো বিরল ঘটনা বটে। তার মানে এ নয়, তারা বিলুপ্ত প্রানী। সময় হলে দল বেঁধে আকাশে বাতাস কাঁপিয়ে সর্বত্র জমিনে বিচরন করবে তারা। সময় সুযোগের অপেক্ষায় আছে উদ্ভাবিত সার্স, মাস প্রজাতির করোনা ভাইরাসের দল,ইতিহাস কথা বলে। এখনো সাবধান হওয়া উচিৎ সবাইকে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।তা না হলে পৃথিবী মহাশ্মশানে পরিনত হবে চোখের নিমেষে ,শুধু সময়ের অপেক্ষা।মানুষের নিজের পদছায়া যখন বড় আকার ধারন করে বসবে, বুঝতে হবে উপরে যাবার টিকিট কাটার সময় সন্নিকটে চলে এসেছে মানুষের। সময় কাউকে চুল পরিমান ছাড় দেইনি কখনও।
উদাহরন দেয়া যাক, একট ভদ্র লোক কোষ্টকাঠিন্যে ভুগছেন। বয়স ৩০ বছরের মতো কিন্তু লোকটি ডাক্তারের চেয়ে দুই লাইন বেশি বোঝে!ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি পূর্বে কোনো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছেন।ভদ্রলোকটি বললেন, আমি জানি কি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ ভাল হয়,টয়লেট ক্লিয়ার হয়।তাই ডাক্তারের প্রযোজন পড়েনি আগে।এখন নিরুপায় হয়ে মৃত্যু পথ যাত্রী হয়ে আপনার কাছে এসেছি। ডাক্তার বললেন আপনি কি খেয়ে নিরাময় পেতেন। রুগি বললো, আমি ইসুব গুলোর ভুসি খেতাম ,এখন কোন কাজে আসছে না সাহেব ।ডাক্তার বাবু বললেন কাচা বয়সে যদি ভুসি খেয়ে টয়লেট ক্লিয়ার করতে হয়! সামনে তো আরো বয়স পড়ে রয়েছে, তখন কি খেয়ে টয়লেট ক্লিয়ার করবা মিয়া।কথায় আছে, “ডাক্তারের চেয়ে যে রুগী বেশি বুঝে,সে রুগী চামচ খেয়ে মরে”। আসলে আমরা যদি আপরিনত বয়সে অকালপক্ব হয়ে যায়, ভবিষ্যতে কোন মেডিসিন আমাদের উপর কাজ করবে না। আমাদের মধ্যে অনেকের জ্ঞান বুদ্ধি প্রচুর রয়েছে। কিন্তুু যথাযথো স্থানে, সঠিক সময়ে প্রযোগ করতে পারিনা।করোনা মহামারী প্রতিরোধে আমাদের সাধারন মানুষের সচেতন হতে হবে।
হাতের পাঁচটি আঙ্গুল যেমন একরকম হয় না সেরূপ
কোন মানুষ নিজে স্বয়ংসম্পূর্ন নয়।আমাদের রয়েছে সামজিক সচেতনতার অভাব।আমরা অনেক সময় সঠিক তথ্য গোপন করি, এটা মহা অন্যায় সাথে লজ্জার বটে। একটা লোকের সাত জন ছেলে মেয়ে। বর্তমান সমাজেএটা লজ্জার বটে। তবে সাতটি ছেলে মেয়ে গ্রাজুয়েট। ছোট ছেলের মন খুব খারাপ থাকে ইদানীং , কারন তার অনেক ভাই বোন বলতে লজ্জাবোধ করে বন্ধু মহলে। এজন্য বাবা মায়ের প্রতি রাগের অন্ত নেই। একদিন বাবার প্রতি রাগ হয়ে বলেই দিলেন, আপনি কেমন মানুষ, এই যুগে এতো গুলো ছেলে মেয়ের বাবা হতে লজ্জা বোধ করে না আপনার? পিতা নরম কন্ঠে ছেলেকে বুঝালেন, আব্বা আমাদের সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এতো উন্নত ছিলো না।
তার থেকে বড় কথা আমি যদি সাত সন্তানের জন্ম না দিতাম। তোমার মতো চাঁদের টুকরো ছেলেকে কিভাবে পেতাম।তুমিতো পৃথিবীর মুখটাই দেখতে পেতে না। তোমাকে জন্ম দেওয়া যদি আমার অন্যায় হয়ে থাকে, ক্ষমা করিস বাপ। বাবার কথা শুনো ছেলেটি তার ভুল বুঝতে পারলো, বাবাকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাইলো। নতুন করে দুর্ভিক্ষ আসবে বলার অপেক্ষা রাখেনা।করোনার বিরূপ প্রভাব পড়ছে শিক্ষা ও স্বস্থ্য ক্ষেত্রে।এভাবে একটি দেশে তথা পৃথিবীতে নেমে আসবে মহামারী করোনার প্রভাবে দুর্ভিক্ষ।আমরা ভবিষৎতে আরো বড় দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।এভাবে চলতে থাকলে আমাদের প্রিয় সবুজ গ্রহটি প্রানহীন অন্য গ্রহদের মতো কঠিন তপ্ত শীলায় পরিনত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
সারকথা-করোনা শকুনদের বংসসহ নিমূল করতে হলে প্রয়োজন কিছু দিনের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে চলা উচিৎ ,যতোদিন পর্যন্ত উন্নত মানের করোনা ভ্যাকসিন বের না হচ্ছে। পৃথিবীর বুকে নিদিষ্ট যাইগায় থেকে শান্ত পরিবেশে বসবাস করতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করতে হবে। আমরা দুর্ভিক্ষ চাই না, সুন্দর পৃথিবীটাকে নিরাপদ অশ্রয়স্থল করে গড়ে তুলতে হবে। এটা অঙ্গিকার হোক সবার।
কলমে- পবিত্র কুমার দাশ।( সঃ শিঃ)
বৈদ্যবাটি সঃ প্রাঃ বিঃ।
কালিয়া,নড়াইল।
রাতদিন নিউজের লেখা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এই লিংকে ক্লিক করুন